
৳ ৪০০ ৳ ৩০০
|
২৫% ছাড়
|
Quantity |
|
৯৯০ বা তার বেশি টাকার বই অর্ডারে ডেলিভারি চার্জ ফ্রি। কুপন: FREEDELIVERY
প্রথম অর্ডারে অতিরিক্ত ১০০ টাকা ছাড়; ১০০০+ টাকার বই অর্ডারে। ৫০ টাকা ছাড়; ৫০০+ টাকার বই অর্ডারে। কুপন: FIRSTORDER





গ্রন্থকার তার আত্মজীবনীর প্রারম্ভেই নিজের বংশ পরিচয় বিশ্লেষণ করেছেন ৷ সেখানে তিনি পাঠককে সরস বর্ণনায় জানিয়ে দিয়েছেন রাজ-রাজাদের রক্ত থেকে তার বংশ পরম্পরার কাহিনি ৷ এরপর লেখক তার শিক্ষাজীবন ও নানা প্রতিকূলতার বর্ণনা দিয়েছেন নির্মোহভাবে ৷ ভারতবর্ষের ইতিহাস উন্মোচনে যেসমস্ত ব্যক্তিবর্গ আজীবন নিরলস পরিশ্রম করে গেছেন শ্রী রমেশচন্দ্র মজুমদার তাদের অন্যতম ৷ আপোষহীন সত্যানুসন্ধানে ব্রত কর্মময় জীবনে তিনি সাহচার্যপ্রাপ্ত হয়েছেন স্যার আশুতোষ মুখার্জি, যদুনাথ সরকার, পি জে হার্টগ, রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, এফ রহমান, নলিনীকান্ত ভট্রশালী, পণ্ডিত জওহারলাল নেহরু, সরোজিনী নাইডু এবং ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহসহ নানাবিধ গুণমুগ্ধ মানুষের সাথে ৷ সংগত কারনে তার আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে এসমস্ত মানুষের সাথে তার আলাপ চারিতা এবং তাদের কর্মজীবনের আলোচনাও ৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক পর্যায়ের ভিসি হওয়ার অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মকথা, অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক পার্থক্যের কথাও বলেছেন অকপটে ৷ উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির জন্য বই ক্রয় বিষয়ে সঞ্চিত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করতে গিয়ে লেখক তার আত্মজীবনীতে লেখেন--
একদিন খবরের কাগজে কিংবা কোন ক্যাটালগে কোথায় যেন দেখলাম যে বিলেতে পীশেল এবং অারো দু- একজন প্রাচ্যবিদ পন্ডিত ব্যক্তির লাইব্রেরি বিক্রি হবে। খবরটি পড়ে তখনই আমি স্যার আশুতোষের বাড়িতে হাজির হলাম। একটি কাগজে লিখলাম যে, বই সংগ্রহের একটি খুব ভালো সুযোগ এসেছে এবং এটি খুবই জরুরী। তিনি বললেন, 'এখনই এর ব্যবস্থা করতে হবে,নইলে বিক্রি হয়ে যাবে'। একটি কাগজে দু-চার লাইন কী লিখে আমাকে বললেন, ' তুমি এনিয়ে বেলা ন- দশটার মধ্যে ক্যাম্ব্রে কোম্পানির দোকানে যাবে। তাদের এই কাগজটা দেখিয়ে বলবে এখনই যেন বিলেতে 'কেবল' করে দেয়। পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত দাম হলেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যেন এই বই অবশই কেনা হয়। তারপর দুপুরে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে, শৈলেনকে সব বলে এই কাগজটি তাকে দেবে।' আমি যথারীতি প্রথমে ক্যাম্ব্রে কোম্পানিতে গেলাম। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে একাউন্ট্যান্ট শৈলেন বাবুকে সব বললাম। শৈলেন বাবু বললেন, " আপনারা ভাবে এসব করেন আর জবাবহিদি করতে আমাদের প্রাণ যায়। এই যে ২৫ হাজার টাকার বই কেনা হলো, এর কোন স্যাংশন নেই। কমিটি হলো না,সিন্ডিকেটে গেলোনা। যখন অডিটে ধরবে তখন আমাকে বলতে হবে এর কোন ভাউচার নেই,কর্তার মুখেই এর ভাউচার। এ সবই খুব বে-নিয়ম।"
আমি বললাম, ' আমাকে এসব বলে লাভ কী? যা বলবার স্যার আশুতোষকে বলবেন।' অবশ্য বিলক্ষণ জানতাম যে স্যার আশুতোষকে এ কথা বলার সাহস তার হবেনা। এর বহুকাল পরের কথা- আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করি। সেখানকার লাইব্রেরির জন্য প্রাচীন ভারতের ইতিহাস সম্বন্ধে বই কেনার কথা বললে ভাইস চ্যান্সেলর হার্টগ সাহেব এ বিষয়ে খুবই সহানুভূতি দেখান। কিন্তু যখনই এরকম কোন বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়, তিনি নিয়ম মাফিক প্রথমে লাইব্রেরি কমিটি,পরে ফিনান্স কমিটি এবং এক্সকিউটিভ কমিটিতে তা আলোচনা করেন। এদের সম্মতি পেলে তবেই বই কেনার অর্ডার দেয়া হয়। প্রায়ই দেখা যেতো যে, অর্ডার পৌঁছানোর অাগেই সেই বই বিক্রি হয়ে গেছে। কয়েকবার এরকম হওয়ার পর অামি তাকে উপরের ঘটনাটি বললাম। তিনি বললেন,
" ভারত বর্ষে এক আশুতোষ ছাড়া আর দ্বিতীয় কোন ভাইস চ্যান্সেলর নেই যিনি নিজের ইচ্ছামত এভাবে পঁচিশ হাজার টাকা ব্যয় করতে পারেন। আমার পক্ষে তা সম্ভব নয়।"
উপর্যুক্ত ঘটনা থেকে কলকাতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভেদ বোঝার জন্য যথেষ্ট হয়ে যায় ৷ এছাড়া ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে লেখক উপমহাদেশের তৎকালীন হিন্দু মুসলিম সম্পর্কের একটি স্পষ্ট ধারণা দেবার চেষ্টা করেছেন। এছাড়া আত্মজীবনীতে উঠে এসেছে তৎকালীন হিন্দু সমাজে কুলীন ব্রাহ্মণদের মধ্যে পঞ্চাশ-ষাটটি বিবাহ করার রীতির এক অদ্ভূত ও রসাত্মক বর্ণনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতায় আমরা অযাচিতভাবে রবীন্দ্রনাথকে দায়ী করলেও সত্যিকারের বিরোধিতাকারীদের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে এই বইটির মাধ্যমে ৷ প্রাচীন পুঁথিসমূহের আবিষ্কারক ও সংগ্রহকে ঘিরে পন্ডিতবর্গের মধ্যকার কাঁদা ছুড়োছুড়ির বিষয়টিও বাদ যায়নি আত্মজীবনীর স্মৃতিচারণ থেকে । সবমিলিয়ে একজন ইতিহাসের ছাত্র হিসেবে বইটাকে আমার কাছে সুখপাঠ্য বই বলে মনে হয়েছে ৷ ইতিহাস প্রকৃত স্বরুপ অনুসন্ধানে অনুসন্ধিৎসু পাঠকদের জন্য বইটি অবশ্যপাঠ্য বলে করি।
Title | : | জীবনের স্মৃতিদীপে |
Author | : | রামেন্দু মজুমদার |
Publisher | : | সূচীপত্র |
ISBN | : | 9789849213192 |
Edition | : | 2021 |
Number of Pages | : | 223 |
Country | : | Bangladesh |
Language | : | Bengali |
রামেন্দু মজুমদার (জন্ম ৯ আগস্ট ১৯৪১) খ্যাতিমান বাংলাদেশী অভিনেতা, মঞ্চ নির্দেশক, নির্মাতা। তিনি ঢাকার মঞ্চ নাটক আন্দোলনের পথিকৃৎ। মঞ্চের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। শিল্পকলায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০০৯ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
If you found any incorrect information please report us